এবিএনএ : ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে আগমনকে কেন্দ্র করে যারা বিশৃঙ্খলা করেছে তাদের দুষ্কৃতিকারী বলে আখ্যা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সরকারের নমনীয়তাকে কেউ দুর্বলতা ভাববেন না। এ ধরণের অপচেষ্টা সরকার কঠোর হস্তে দমন করতে বদ্ধপরিকর। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গরম বক্তৃতা দিয়ে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবেন, সেটি আর বরদাশত করা হবে না। এবং যারা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন না করে এ ধরণের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবেন, তাদের মূলোৎপাটন করতে আমরা বদ্ধপরিকর।’
শনিবার দুপুরে রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবে সত্যম রায়চৌধুরী সম্পাদিত ‘বঙ্গবন্ধু ফর ইউ’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর দিন ২৬শে মার্চ যেদিন বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করা হয়েছিল, সেদিন তারা স্বাধীনতা দিবস পালন না করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনকে কেন্দ্র করে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা করেছে, বিশৃঙ্খলা করেছে।’
মোদির আগমন ঘিরে বিক্ষোভ থেকে রেললাইনে অগ্নিকাণ্ড-ভাঙচুরের প্রসঙ্গ তুলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এরা দুষ্কৃতিকারী। এরা আমাদের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, শান্তি, স্থিতি, সম্প্রীতির শত্রু। আমরা যদি এদের খবরাখবর নেই, দেখা যাবে এদের অনেকেরই বাপ-দাদারা রাজাকার ছিল। যারা আজকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বড় গলায় কথা বলে, তাদের বাপ-দাদাদের ভূমিকার খবর নিন, দেখা যাবে তারা অনেকেই একাত্তরে যুদ্ধের সময় পাকিস্তানের পক্ষ নিয়েছিল, আমাদের দেশে নারীনির্যাতন, গণহত্যার সাথে যুক্ত ছিল।’
হাছান মাহমুদ আরও বলেন, ‘যে ভারত ১৯৭১ সনে আমাদের এক কোটি মানুষকে আশ্রয় দিয়েছে, যে ভারতের মানুষ আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে তাদের রক্তও ঝরিয়েছে, যে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বাংলাদেশের মানুষের স্বাধীনতা আর বঙ্গবন্ধুর মুক্তির জন্য বিশ্ব জনমত গড়তে সমগ্র পৃথিবী চষে বেড়িয়েছেন, সেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদি এসেছেন। কোনো দলের নেতা হিসেবে তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বা তিনি কোনো দলের নেতা হিসেবে আসেনওনি। অথচ, এই নিয়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হয়েছে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে যারা এই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে, সেই একই গোষ্ঠী ২০১৩-১৪-১৫ সালে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছিল এবং তাদের সাথে ছিল বিএনপি। সেই বিশৃঙ্খলা আমরা মোকাবিলা করেছি, আমাদের অভিজ্ঞতা আছে। সুতরাং আবার বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাবেন না।’ অনুষ্ঠানের আয়োজক ‘ফ্রেন্ডস অভ বাংলাদেশ’ এর প্রধান সমন্বয়ক এ এস এম শামছুল আরেফিনের সভাপতিত্বে সংগঠনের সদস্য পংকজ দেবনাথ, সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি ড. রাধা তমাল গোস্বামী, দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, গ্রন্থটির সম্পাদক সত্যম রায়চৌধুরী, প্রকাশক দীপ প্রকাশনের শংকর মন্ডল প্রমুখ বক্তব্য দেন।
ইংরেজি ভাষায় প্রণীত ৬১৬ পৃষ্ঠার ১২ অধ্যায়ের ‘বঙ্গবন্ধু ফর ইউ’ গ্রন্থে বঙ্গবন্ধুর কারাগারের রোজনামচা এবং বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লেখা ভূমিকা সন্নিবেশিত রয়েছে।